আবু সুফিয়ান (রাঃ)-কে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করা হয় নি
islamweb ফতোয়া নং ৩৭৪০৯৮
https://www.islamweb.net/en/fatwa/374098/abu-sufyan-was-not-forced-to-embrace-islam
অনুবাদ ও সম্পাদনাঃ তাহসিন আরাফাত
প্রশ্নঃ আমার প্রশ্নটি আবু সুফিয়ান (রাঃ)-এর ইসলাম গ্রহণ নিয়ে। অনেক ইসলামবিরোধীরা যুক্তি দেয় যে আবু সুফিয়ান (রাঃ) কে জোরপূর্বক ইসলাম গ্রহণ করানো হয়েছে। তারা নিম্নোক্ত বর্ণনাটি দেখায়ঃ
"ধিক্ তোমার প্রতি, আবু সুফিয়ান! এখনো কি তোমাদের জানার সময় হয়নি যে, আমি আল্লাহর রসূল?" - রাসূল (সাঃ) বললেন।
আবু সুফিয়ান বললেন, "আল্লাহর কসম, হে মুহাম্মাদ, আমার অন্তরে এ বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে।"
হযরত আব্বাস (সাঃ) আবু সুফিয়ানকে বললেন, "ধিক্ তোমাদের প্রতি! তরবারী দ্বারা তোমার শিরশ্চেদ করার আগেই ইসলাম গ্রহণ কর এবং সাক্ষ্য দাও যে, মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল।
এভাবে তিনি ইসলামের বিশ্বাসকে স্বীকার করেন এবং মুসলিম হন।" [1][2]
দ্বীনের ব্যাপারে কোন জোর-জবরদস্তি না করার কুরআনের নির্দেশের সাথে এই ঘটনাকে কিভাবে সমন্বয় করা যায় (কুরআন, আল-বাকারা ২৫৬)?
ধন্যবাদ।
উত্তরঃ
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা'আলার, যিনি নিখুত এবং এই বিশ্বজগতের পালনকর্তা।
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য কেউ নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর দাস এবং রসূল।
প্রশ্নের মধ্যে উল্লিখিত কাহিনীতে ইসলাম গ্রহণ করার কোন বাধ্যবাধকতা নেই - (যদি এটি সহিহ বিশুদ্ধ বর্ণনা হয়।)
আবু সুফিয়ান (রঃ) ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন, এবং সে তার কাজগুলোর জন্য শাস্তি পাওয়ার যোগ্য, এই কারণগুলোর উপর ভিত্তি করে এবং ইসলামিক উভয়ভাবেই।
আব্বাস (রঃ) তাকে জানিয়েছিলেন যে, যদি তিনি ইসলাম গ্রহণ করে নেন, তবে তিনি মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার থেকে বেঁচে যাবেন, যা তিনি মুসলিমদের সাথে যুদ্ধ ও হত্যা করার কারণে পাওয়ার উপযুক্ত ছিলেন।
এটা দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার যে, আব্বাস (রঃ) এর বক্তব্য আবু সুফিয়ান (রঃ)-এর উপর ইসলাম গ্রহণে জোরাজুরি ছিলো না।
অন্যদিকে, আব্বাস (রঃ) এর কথায় যৌক্তিক ও ইসলামিক সুবিধাগুলো সুস্পষ্ট, কারণ তিনি বহু বছর ধরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে মুশরিকদের নেতা ছিলেন।
সুতরাং, আবু সুফিয়ানকে (রঃ) যদি ছেড়ে দেওয়া হতো, তাহলে তিনি কুরাইশদের মধ্যে থেকে বাহিনী বানিয়ে আবার মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হতেন - এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
ইতিহাসে কি এমন কোনো যুদ্ধ আছে যেখানে সেনাপতি তাঁর শত্রুকে মুক্তভাবে ছেড়ে দেন?
এই কাহিনি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানার জন্য মুনির-আল-গাধবান এর 'আল-মানহাজ আল-হারাকিলিস-সীরাহ আন-নবাবীয়াহ' এবং আল-বূতি এর 'ফীক্বহ আস-সীরাহ আল-নবাবীয়াহ' পড়ুন।
আপনার দেখানো বর্ণনাটি সহিহ কিনা সেটা বাদ দিলেও, আবু সুফিয়ান ইবনে হারব (রঃ) মক্কা বিজয়ের বছরই ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন এবং সাম্প্রতিক ইসলাম গ্রহণকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তারা ইসলাম গ্রহণ করেছিলো হয় মৃত্যুভয়ে, অথবা বন্দী হওয়ার ভয়ে, অর্থের লাভের আশায় ইত্যাদি। [3]
তা সত্ত্বেও তাদের বেশিরভাগ পরবর্তীতে ভালো মুসলিম হয়ে উঠেছিলেন, আর সঠিক বিশ্বাস স্থাপন করেছিলেন।
ইবনে তাহমিয়্যা (রঃ) বলেছেন, "বন্দীদের মধ্যে থেকে যারা মুক্ত হয়েছিল তাদের অধিকাংশেরই হৃদয় সম্প্রতি ইসলামের সাথে মিলিত হয়েছিলো, এবং তাদের অধিকাংশই ভাল মুসলমান হয়ে ওঠে। তাদের মধ্যে একজন মানুষ দিনের শুরুতে পার্থিব জীবনে কিছু অর্জনের জন্য ইসলাম গ্রহণ করতো, কিন্তু দিনের শেষে ইসলাম তার জন্য আরও প্রিয়তম হয়ে ওঠতো।"
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, আবু সুফিয়ান একটি ভাল মুসলিম হয়ে ওঠেছিলেন এবং তিনি আল্লাহর জন্য লড়াই করেছিলেন এবং তাঁর গুণাবলী বিখ্যাত হয়ে ওঠে; এমন কেউ নেই যে, (শুধুমাত্র একটি অহংকারী জিনিস ছাড়া) তার শ্রেষ্ঠত্ব এবং গুণাবলী অস্বীকার করবে।
আল্লাহ ভাল জানেন।
অনুবাদকের কথাঃ
১ একজন মুশরিক অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে কী লাভ তার?
ইহকালীনও কোনো লাভ নেই, শিরক করতে পারবে না আর! পরকালীন তো দূর কি বাত!
মৃত্যুদণ্ডের যোগ্য আসামী যদি স্বেচ্ছায় আল্লাহর মনোনিত দ্বীন গ্রহণ করে এবং নিজের মৃত্যুদণ্ড থেকে ক্ষমা পেয়ে যায়, তাহলে আপনার আপত্তি কীসের?
আলহামদুলিল্লাহ, এটি তার জন্য খুবই উত্তম।
মুশরিক অবস্থায় মৃত্যুর চেয়ে এটি খুবই উত্তম!
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, 'আমর! তুমি কি জান না যে, ইসলাম পূর্ববর্তী সকল অন্যায় মিটিয়ে দেয়।"
দেখুনঃ মুসলিম (হাঃ একাডেমী ২২০, ইফাবা ২২১, ইসলামীক সেন্টার ২২৯)
আলহামদুলিল্লাহ শুধুমাত্র ফিরে আসার কারণেই তার আগের গুনাহ ক্ষমা হয়ে গিয়েছে।
সে তার বাকি জীবনটাকে কাজে লাগাতে পারবে ভালোভাবেই,
"আর তোমাদের মধ্যে কেউ যেন মৃত্যু কামনা না করে। কেননা, সে ভাল লোক হলে (বয়স দ্বারা) তার নেক ‘আমল বৃদ্ধি হতে পারে। আর খারাপ লোক হলে সে তওবা করার সুযোগ পাবে।"
দেখুনঃ বুখারী ৫৬৭৩,৭২৩৫, নাসাঈ (ইফা) ১৮২১,১৮২২, রিয়াদুস স্বালিহীন ১/৫৯০, দারেমী ২৭৯৬, মিশকাত ১৫৯৯, হাদিস সম্ভার ১২৬৭,১২৭০,১২৭১ ইত্যাদি।
সে তো মৃত্যুদণ্ড থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে নিজের জন্য এক অপূর্ব সুযোগ দিলো!
আবু সুফিয়ান (রাঃ) নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিলেন, তিনি যাদের উপাসনা করতেন সেগুলোর কোনো মূল্যই নেই।
আবূ সুফিয়ান বলল,
‘আমার পিতামাতা আপনার জন্য উৎসর্গিত হোক । আপনি যে, কত সহনশীল, কত সম্মানিত এবং স্বজনরক্ষক! আমি বুঝে নিয়েছি যে, যদি অন্য কোন উপাস্য থাকত তাহলে এতদিন তা আমার কাজে আসত।’ [2]
এই সেই আবু সুফিয়ান, যিনি প্রত্যক্ষভাবে রাসূল (সাঃ) এর মু'জিজা দেখেছিলেন, রাসূল (সাঃ) এর প্রতি সাক্ষ্য দিয়েছেন।
দেখুনঃ আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া ইফাবা ৪/৫২২
আবু সুফিয়ান আশ্রয়দাতার সম্মানও লাভ করলেন, তিনি যে কাউকে আশ্রয় দেওয়ার সম্মান লাভ করেছিলেন। [2]
২ শুধু ইহকালীন লাভ ধরলে,
আপনি যত বেশিদিন বেঁচে থাকবেন, আপনি ততো বেশিদিন কাজ করতে পারবেন।
আপনি পাপী হলে নিজের কু-প্রবৃত্তি ততো বেশি করার সুযোগ পাবেন।
নিজেকে মৃত্যুদণ্ড থেকে বাঁচিয়ে নিতে পারলে আপনার লাভ না কি? পরবর্তীতে আপনি আপনার কুকাজ করার জন্য আয়ুর দিক থেকে তো সুবিধা পাচ্ছেন। (নাউজুবিল্লাহ)
৩ রাসূল (সাঃ) যা করতেন আল্লাহর নির্দেশেই করতেন। 'পরাজিতদের মধ্যে যারা ইসলাম গ্রহণ করতো তাদেরকে ক্ষমা করে দেওয়া হতো।'
এই সুদুরপ্রসারি নিয়মে দু'পক্ষেরই লাভ হতো। একজনের লাভ উপরে দেখিয়েছি।
পাশাপাশি মুসলিম জামা'আতের সংখ্যা বৃদ্ধি হতো। বেশিরভাগই প্রথমে মুনাফিক থাকতো, আর তাদের অধিকাংশই পরে ইসলামকে নিজেদের হৃদয়ে ধারণ করে নিতো।
(আর বাদ বাকি কিছু মুনাফিক সবসময়েই থাকতো)
আলহামদুলিল্লাহ, সারা বিশ্বে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার জন্য একজন সত্যিকারের মুসলিম বেশি হওয়াও খুব এফেক্টিভ।
সাথে একজনকে হিদায়াতলাভে সাহায্য করার প্রতিদানও কম নয়!
রেফারেন্স ও টীকাঃ
1. Ibn Hisham, part 4, p. 11; Chronicle of the Tabari, part 2, p. 157; Ibn Kathir, "The Prophetic Biography", part 3, p. 549, Ibn Kathir, "The Beginning and the End"; Ibn Khaldun, the rest of part 2, p. 43 and on; Al-Sira al-Halabiyya, Vol. 3. p. 18; Al-Sohaily, Al Road Al Anf, part 4, p. 90; Dr. Muhammad Sa’id Ramadan al-Buti, "Jurisprudence in Muhammad'’s Biography",7th ed., p.277
2. আর রাহীকুল মাখতুমে এভাবে এসেছেঃ
"রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, (اِذْهَبْ بِهِ يَا عَبَّاسُ إِلٰى رَحْلِكَ، فَإِذَا أَصْبَحَتْ فَأْتِنِيْ بِهِ) ‘আব্বাস একে (আবূ সুফইয়ানকে) নিজ তাঁবুতে নিয়ে যাও, প্রত্যুষে আমার নিকট নিয়ে এসো। নাবী কারীম (ﷺ) এ নির্দেশ মোতাবেক তাকে তাঁবুতে নিয়ে যান এবং সকালে নাবী কারীম (ﷺ)-এর খিদমতে হাযির করেন। তাঁকে দেখে তিনি (ﷺ) বললেন, (وَيْحَكَ يَا أَبَا سُفْيَانَ، أَلَمْ يَأْنِ لَكَ أَنْ تَعْلَمَ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ؟) ‘হে আবূ সুফইয়ান! তোমার উপর দুঃখ হচ্ছে এ জন্য যে, আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই এ মহাসত্য উপলব্ধি করার সময় কি এখনো তোমার হয় নি?
আবূ সুফইয়ান বলল, ‘আমার পিতামাতা আপনার জন্য উৎসর্গিত হোক । আপনি যে, কত সহনশীল, কত সম্মানিত এবং স্বজনরক্ষক! আমি বুঝে নিয়েছি যে, যদি অন্য কোন উপাস্য থাকত তাহলে এতদিন তা আমার কাজে আসত।’
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন,(وَيْحَكَ يَا أَبَا سُفْيَانَ، أَلَمْ يَأْنِ لَكَ أَنْ تَعْلَمَ أَنِّيْ رَسُوْلُ اللهُ؟) ‘আবূ সুফইয়ান! তোমার জন্য সত্যিই দুঃখ হয়। এখনো কি তোমার বুঝবার সময় আসে নি যে, আমি সত্যিই আল্লাহর রাসূল (ﷺ) অর্থাৎ আমি যে সত্যিই আল্লাহর রাসূল (ﷺ) এ সত্য উপলব্ধি করা কি এখনো তোমার পক্ষে সম্ভব হয় নি।’
আবূ সুফইয়ান বলল, ‘আমার মাতাপিতা আপনার উপর উৎসর্গিত হোক। আপনি কতইনা ধৈর্য্যশীল, কতইনা দয়ালু ও আত্মীয়তা সম্পর্ক স্থাপনকারী! কিন্তু ঐ ব্যাপারে এখনো কিছু না কিছু সংশয় তো আছেই। এ প্রেক্ষিতে আব্বাস (রাঃ) বললেন, ‘ওহে শোন! গ্রীবা কর্তনের পূর্বেই ইসলাম কবুল করে নাও এবং এ কথা স্বীকার করে নাও যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ উপাস্য হওয়ার যোগ্যতা রাখেনা এবং মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর রাসূল (ﷺ)। আব্বাস (রাঃ)-এর এ কথার প্রেক্ষিতে আবূ সুফইয়ান ইসলাম কবুল করলেন এবং সত্যের সাক্ষ্য প্রদান করে কালেমা পাঠ করলেন।
আব্বাস (রাঃ) বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আবূ সুফইয়ান সম্মান প্রিয়, তাই তাঁকে কোন সম্মান প্রদান করুন। নাবী কারীম (ﷺ) বললেন,
(نَعَمْ، مَنْ دَخَلَ دَارَ أَبِيْ سُفْيَانَ فَهُوْ آمْنٌ، وَمَنْ أَغْلَقَ عَلَيْهِ بَابَهُ فَهُوْ آمِنٌ، وَمَنْ دَخَلَ الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ فَهُوَ آمِنٌ).
‘ঠিক আছে, যে ব্যক্তি আবূ সুফইয়ানের ঘরে প্রবেশ করবে সে আশ্রিত হবে এবং যে নিজ ঘরের দরজা ভিতর হতে বন্ধ করে নেবে সে আশ্রিত হবে এবং যে মসজিদুল হারামে প্রবেশ করবে সেও আশ্রিত হবে।"
দেখুনঃ আর রাহীকুল মাখতুম, তাওহীদ পাবলিকেশন্স,
http://www.hadithbd.com/books/link/?id=6384
- অনুবাদক
3. এই অংশে আবু সুফিয়ান (রাঃ) ও সমসাময়িক কিছু নব-মুসলিমদের বিরুদ্ধে সমালোচনা শোনা যায়। সমালোচকদের মতে:
আবু সুফিয়ান ছিলেন একজন মারাত্মক চিন্তাশীল ও সুবিধাবাদী রাজনৈতিক ব্যক্তি। এবং 'যখন যেমন তখন তেমন' নীতির অনুসারী।
প্রথমে যখন মুসলিমরা দুর্বল ছিলো তখন তাদের বিরুদ্ধাচারণ করেন। এহেন কোনো ষড়যন্ত্র নেই যা তিনি করেন নি। তার কাব্যচর্চার প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে পুরো আরবকে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর বিরুদ্ধে উষ্কেছেন। মুসলিমদের বিরুদ্ধে একাধিক যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন। বদরের যুদ্ধ, খন্দকের যুদ্ধ…
আবার যখন মুসলিমরা প্রাধান্য বিস্তার করলো তখন তিনি মুসলিম হয়ে গেলেন।
কিন্তু, আমি এই সমালোচনাকে ব্যক্তিগতভাবে সমর্থন করি না। আমি মনে করি তিনি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিলেন, আসলেই একজন ভালো মুসলিম হয়ে উঠেছিলেন।
আবু বকর (রাঃ) এর শাসনামলে তিনি অভিযানগুলোতে মুসলিম সৈন্যদের বীরগাথা গেয়ে গেয়ে উৎসাহ দিতেন, সংখ্যায় বেশি কাফিরদের দেখে যেন ভয় না পায় সেই মনোভাব তৈরি করতেন।
(তখন বৃদ্ধ হয়েছিলেন, তাই সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিতে পারতেন না।)
খালিদ বিন ওয়ালিদ (রঃ) এর এই পদ্ধতি অনেক কাজে লেগেছিলো।
আলহামদুলিল্লাহ আমি মনে করি, নবমুসলিমদের মধ্যে থেকে যারা মুনাফিক থেকে যান নি, ভালো মুসলিম হয়েছিলেন, এই জগতের সৃষ্টিকর্তার মনোনিত দ্বীনকে নিজের মধ্যে ধারণ করতে পেরেছিলেন, তাদের মধ্যে আবু সুফিয়ান (রঃ) নিজের জায়গা করে নিতে পেরেছিলেন।
- অনুবাদক
বিঃদ্রঃ এখানে বর্ণনার তাহক্বীকে যাই নি। সহিহ হলেও সমস্যা নেই - এটাই মূল বিষয়।
এক কথায় বলতে গেলে,
আপনাকে দেখানো হবেঃ
* আবু সুফিয়ান ছিলো নির্দোষ।
* তার কোনো দোষ না থাকা সত্ত্বেও তাকে জোর করে তলোয়ারের মুখে ইসলাম কবুল করানো হয়েছে।
আসলে যা,
* এহেন কোনো অপকর্ম নাই যা সে করে নি, এবং ইসলামের বিপরীতে যুদ্ধ করেছে। এটা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক, মৃত্যুদণ্ড দেওয়া, যেকোনো দলের পক্ষেই।
* সে স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করে নিয়েছে, আর তাকে আল্লাহর মনোনিত দ্বীন কবুলে প্রাপ্য মৃত্যুদণ্ড থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এতে কারো আপত্তি থাকার কথা না।